“ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন” সার্ভিস নেয়ার পূর্বে সবাইকে অনুরোধ করবো “ল্যান্ডিং পেজ” সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করে নিন।
আমাদের মধ্যে অনেকেই জানি না ল্যান্ডিং পেজ কি , ল্যান্ডিং পেজ করতে কি কি দরকার হয় , কত টাকা খরচ হবে ইত্যাদি। এর ফলে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন অফার দেখে কনফিউজড হয়ে যাই। কেউ বলে ডোমেইন হোস্টিং সহ ল্যান্ডিং পেজ মাত্র ২৫০০ টাকা, কেউ বলে ৩৫০০ টাকা, আবার কেউ বা বলে ১৫০০ টাকা।
অথচ বাস্তবতা হলো, শুধুমাত্র একটা ডোমেইনের দামই ১২০০-১৫০০ টাকা (১ বছরের জন্য)। জাস্ট শুরু করার জন্য একটা সস্তা শেয়ারড হোস্টিং নিয়ে শুরু করতে গেলেও সেটার প্রাইস পড়ে ২৫০০-৩৫০০ টাকা (১ বছরের জন্য)।
এক কথায় ‘ডোমেইন এবং হোস্টিং’ এর জন্য আপনার ইনিশিয়ালি ৪০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা বাজেট থাকা লাগে। এটাকে যদি আপনি ফ্লেক্সিবল করতে চান তাহলে হোস্টিং বিল ১ বছরের জন্য পরিশোধ না করে মাসে মাসে পে করতে পারবেন, ৫০০ টাকা করে। তো, সে ক্ষেত্রে জাস্ট শুরু করার জন্য ২০০০ টাকার মত বাজেট থাকলে আপনি ল্যান্ডিং পেজের জন্য ডোমেইন হোস্টিং কিনতে পারবেন।
আরেকটা প্রিমিয়াম প্লাগিনের (Cartflows Pro) দরকার পড়বে যদি আপনার প্রোডাক্টের ভ্যারিয়েশন থাকে। ভ্যারিয়েশন বলতে একটা অর্ডার ফর্মে একাধিক ডিজাইন, কালার, ওজন, প্রাইস ইত্যাদি অ্যাড করতে চাইলে। যেমনঃ পাঞ্জাবী, তেল, গুড় ইত্যাদির ক্ষেত্রে লাগে। তো এই প্লাগিনটি আপনি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে কিনতে চাইলে অনেক খরচ পড়বে প্রায় ১০ হাজার টাকার মত। বাট অনেক কোম্পানি আছে অনেক গুলো লাইসেন্স এক সাথে কিনে – তাদের কাছ থেকে চাইলে একটু কমে কিনতে পারবেন। যেমনঃ আমাদের কাছ থেকে নিলে ২ হাজার টাকা প্রাইস পড়বে। বাজারে আরো অনেকেই এই প্লাগিন সেল করে ৩০০, ৫০০ টাকায় বাট সেগুলো অফিসিয়াল না, GPL বলবে ( লাইসেন্স ছাড়া ), এক কথায় ক্রাকড ভার্সন। এগুলো ইউজ করা সাইটের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
যাদের প্রোডাক্টের কোন ভ্যারিয়েশন নেই জাস্ট একটাই প্যাকেজ এবং একটাই প্রাইস তাদের ক্ষেত্রে উপরের প্লাগিন কেনা লাগবে না অর্থাৎ এক্সট্রা খরচ হবে না।
এরপরে আসে “ল্যান্ডিং পেজের কন্টেন্ট” এর কথা।
মনে রাখবেন, একজন ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনার আপনার কন্টেন্ট লিখে দিবে না, বড়জোর হয়তো আপনাকে একটা স্যাম্পল দিয়ে বুঝিয়ে দিবে যে, এরকম ভাবে কন্টেন্ট সাজাতে হবে। বিজনেস আপনার, প্রোডাক্টও আপনার। সো, আপনাকেই এটা লিখতে হবে। নতুবা কোন সেলস পেজ কপিরাইটার হায়ার করে তাকে দিয়ে লিখে নিতে হবে।
আপনার ডোমেইন, হোস্টিং, ল্যান্ডিং পেজের কন্টেন্ট (টেক্সট / ইমেজ / ভিডিও ইত্যাদি) এগুলো রেডি করার পর; ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন সার্ভিস নেয়ার জন্য আপনি রেডি। বাট এটা মাথায় রাখবেন, ‘একজন ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনারের কাজ শুধু ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন করে দেয়া’। কিন্তু এরপর আপনি যদি তার কাছে দাবি করেন যে, ‘পিক্সেল সেটাপ করে দেন, অ্যাড রান করে দেন ইত্যাদি’ সেগুলো কিন্তু সব এক্সট্রা সার্ভিস। এগুলোর জন্য আবার আলাদা সার্ভিস চার্জ আসবে। যারা সার্ভিস দেয় একেক জনের প্রাইস একেক রকম। আর যারা দিবে না; তারা বলে দেয় যে, ‘আমরা শুধু ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন সার্ভিস দেই’।
এবার আসি; “একজন ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনারের সার্ভিস চার্জ কেমন হবে?”
একজন প্রফেশনাল ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনার আপনাকে মিনিমাম ৩ হাজার থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা চার্জ করবে (আপনার রিকোয়ারমেন্টস ভেদে; সো, এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই)। আপনি হয়তো চার্জ শুনে নাক সিটকাবেন; বলবেন যে, ‘অমুকে ৫০০ টাকা বা ১৫০০ টাকায় করে দিচ্ছে আর আপনি বলতেছেন এত টাকা !!’। তাহলে আমি আপনাকে বলবো, ‘একটা কথা মাথায় রাখবেন; কোয়ালিটি বলে একটা শব্দ আছে’।
একদিকে ৫-৭ বছর ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে কাজ করা একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপারের অভিজ্ঞতা আর সময়ের মূল্য এবং অন্য দিকে ‘একজন নন ডেভেলপার ব্যক্তি; যে কয়েক মাস কোন মতে কাজ শিখে জাস্ট সার্ভিস দিচ্ছে’, দুইজনের অভিজ্ঞতার মূল্য কখনো এক হবে না। কোনো ক্রিটিক্যাল ইরোর ফেস করলে আপনি হয়তো তাকে আর খুঁজে পাবেন না। বাট, যে প্রফেশনাল সে আপনাকে বিভিন্ন সমস্যায় হেল্প করতে পারবে।
আরেকটা বিষয়; ‘চটকদার বিজ্ঞাপণ দেখে ১৫০০ টাকায় ডোমেইন হোস্টিং কিনলেও আপনি কিন্তু ঠিকই বাঁশ খাবেন’। জাস্ট কয়েকদিন বা কয়েক মাস পরেই সেটা টের পাবেন।
ডোমেইন হোস্টিং কিনতে হলে; অবশ্যই একটা স্বনামধন্য কোম্পানি থেকে নিজেই পারচেজ করবেন, অন্য কাউকে দিয়ে পারচেজ করালে আপনার বিজনেসের কিডনির মালিক (ডোমেইনের মালিক) কিন্তু আরেকজনই হয়ে যাবে। সো, মন চাইলো আর সার্ভিস নিলাম বিষয়টা এমন না। সার্ভিস নেয়ার পূর্বে কিছু পড়াশোনা করে নিতে হবে।
এবার আসি – “আমাদের কাছ থেকে সার্ভিস নিলে আমরা কেমন চার্জ করি ?”
উত্তর হলো; প্রথেমে আপনার রিকোয়ারমেন্ট দেখতে হবে, তারপর বলা যাবে। আর যদি অন এভারেজ বলি; ‘১ টি ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনের মিনিমাম চার্জ ৩ হাজার টাকা’ (যদি প্রোডাক্টের ভ্যারিয়েশন না থাকে, আর যদি ভ্যারিয়েশন থাকে তাহলে ৫ হাজার টাকা)। ভ্যারিয়েশন বলতে অর্ডার ফর্মে প্রোডাক্টের একাধিক কালার, ওজন, ডিজাইন, প্রাইস ইত্যাদি সিলেক্ট করার অপশনকে বুঝায়।
আমরা শুধু ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন করে দিব, আর কিছু না (ডোমেইন হোস্টিং, কন্টেন্ট এগুলো সব বিজনেস অনার প্রোভাইড করবেন)।
পিক্সেল সেটাপ, কুরিয়ার সেটাপ, সার্ভার সাইড ট্রাকিং ইত্যাদি এগুলো চাইলে; আগে আপনাকে বুঝতে হবে যে, এগুলো কিভাবে কাজ করে। না বুঝে হুট করে যদি বলেন; ‘সার্ভার সাইড ট্রাকিং কত দিতে হবে, তাহলে বিষয়টি মোটেও সুখকর হবে না’।
কেননা আমরা মাক্সিমাম মানুষই জানিনা যে, প্রোপার সার্ভার সাইড ট্রাকিং করতে হলে ‘একটা সার্ভার ভাড়া নিতে হয়, যেটার মান্থলি চার্জ-ই মিনিমাম ২০ ডলার থেকে শুরু হয়’। অথচ আমরা মনে করি, Pixel Your Site Pro ‘ক্রাকড প্লাগিন’ দিয়েই সার্ভার সাইড ট্রাকিং করে উল্টাই ফেলব।
আমি নিশ্চিত যে, পুরো কন্টেন্ট পড়ে আপনি আমার উপর খুবই রাগ হচ্ছেন । বাট, কিছুই করার নেই, এটাই বাস্তবতা।
আরেকটা কথা; ‘Elementor Pro, Cartflows Pro’ এই প্লাগিন গুলো যারা আপনাকে ফ্রিতে দিচ্ছে, তারা মাক্সিমাম আপনাকে অরজিনাল দিচ্ছে না। যেটা দিচ্ছে সেটা হলো GPL (এক কথায় ক্রাকড ভার্সন), এটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতে ‘সাইট হ্যাক’ হলে কান্না করে আর কোন লাভ হবে না।
মোট কথা; বিজনেস করতে গেলে, বিজনেসের জন্য যেটা লাগবে সেটা দিতে হবে এবং নিতে হবে। এক কথায় টাকা ইনভেস্ট করতে হবে।
বিজনেস ‘ভাই, বন্ধু, ডিস্কাউন্ট, টাকা নেই’ এসব বুঝে না।
আর এতো শত ঝামেলা মাথায় না নিয়ে, অন্যের উপর নির্ভরশীল না থেকে; নিজের কাজ নিজে শিখে লাইফটাইম টাকা ও সময় সেভ করতে চাইলে আমাদের কোর্সে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন।
কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।
ধন্যবাদ; আবার কথা হবে, অন্য কোথাও, ইনশাআল্লাহ্।